মানুষের বিপদে-আপদে মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে যুগে যুগে। ধনী-গরিব নির্বিশেষে আর্তের খেদমতে মানুষই অকাতরে আত্মনিয়োগ করেছে তার সর্বস্ব, দিয়েছে শ্রম অন্তরের অনবদ্য আহ্বানে। পরের তরে আত্মত্যাগের এ পবিত্র ধারাটি অবিস্মরণীয় কাল থেকেই অব্যাহত আছে। পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে জনগোষ্ঠীর এই অংশটি কখনো প্রসারিত কখনো বা সংকুচিত হয়েছে, কিন্ত একদম বিলীন হয়ে যায়নি। মানবকূলের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এ বিষয়ে দিয়েছেন শ্রেষ্ঠ দিক নির্দেশনা। খাইরুল কুরুন ও তৎপরবর্তী যুগের সংস্কারকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও অধ্যবসায় দ্বীন ইসলামকে পরিণত করেছে বিশাল মহীরূহে, এর শাখাসমূহকে করেছে প্রসারিত, পত্রপল্লবিত। শিকর মানবকল্যাণ ফাউন্ডেশন সেই অবিচ্ছিন্ন কর্মশিকলের এক মজবুত আংটা যা সর্বক্ষণ অসহায়, দুঃস্থ অভাবী ও সর্বস্তরের জনগণের সেবায় নিয়োজিত। পরস্পরের পরামর্শভিত্তিক পরিচালিত সংগঠনটি ১৯৯৮ইং থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদান করে আসছে।
পরিচালকের কথা
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ্ তায়ালার যিনি এক মুষ্ঠি মাটিকে ঈমানের নেয়ামত দানে ধন্য করেছেন। অশেষ দুরূদ ও সালাম সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর উপর যিনি উভয় জগতের কামিয়াবী ও সফলতার বাণী নিয়ে মানবজগতের কাছে প্রেরিত হয়েছেন। এ দুরূদ অবারিত হোক, ছড়িয়ে পড়ুক তাঁর সকল সহচরদের উপর যারা নূরে নবুওয়াতের বিভায় সরাসরি আলোকিত হয়েছেন। তাঁর শিক্ষা আত্মস্থ করেছেন, ছড়িয়ে পড়েছেন পৃথিবীর আনাচে-কানাচে, উপড়ে ফেলেছেন শিরক-কুফরের যাবতীয় আগাছ।, অঙ্কুরিত করেছেন ঈমানের “শিকড়” মানুষের হৃদয়মূলে যা মানুষকে সমৃদ্ধ করে প্রতি মুহূর্তে, ক্ষণে ক্ষণে করুণাময়ের ইচ্ছায়। এ জগতে মানুষ সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী, মেধাবী ও পজ্ঞাময়। তাদের মাধ্যমে তৈরী হয়েছে নানারকম ধর্ম, জীবনাচার, মতবাদ। প্রত্যেকের আছে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, পছন্দ-অপছন্দ ও স্বার্থ। এ অনুপাতেই তারা নির্ধারণ করেছে নিজ নিজ ধর্ম-মতের বিষয়বস্তু। ইসলাম আল্লাহ্ তা’য়ালার একমাত্র মনোনীত ধর্ম। আল্লাহ্ তা’যালাই এই ধর্মের বিষয় নির্ধারণ করেছেন আর তা হল মানুষ। বস্তুত মানুষের দ্বারাই নির্মিত হয় মানবতার প্রাচীর। আবার পরক্ষণে তার হাতেই তা বিধ্বস্ত হয়। তারই দয়া মহত্ব, সৃষ্টির প্রতি দায়িত্ববোধ ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি তার পরম আত্মসমর্পণ ও নিবেদনে যেমন ঈর্ষান্বিত হয় আকাশচারী নিস্পাপ ফেরেশতা। আবার তারাই মানুষের নির্মমতা, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনাচারে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেয়। মহান আল্লাহ্ তা’য়ালা এই মানুষকে মানুষ বানাবার জন্য প্রেরণ করেছেন অসংখ্য মহামানব, দুনিয়ার মানুষ তাদের নবী রাসূল হিসাবে জানে। তারা নিজেরা পাল্টে যাননি। যুগের স্রোতে ভেসে যাননি। বরং তাদের দ্বারা বদলে গেছে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র, এ পৃথিবী। কিছু বিদগ্ধ আলেম-ওলামা ও শিকড় সন্ধানী তরুণদের উদ্যোগে তিলে তিলে গড়ে তোলা এ ফাউন্ডেশন। আমরা চলতে চাই সকল প্রকার বাড়াবাড়ি, ছাড়াছাড়ির পথ পরিহার করে এক আলোক উজ্জ্বল রাজপথে। আমরা থামব না, স্তব্ধ হব না। দয়াময়ের অশেষ কৃপায় এ কাফেলা অগ্রসর হতে থাকবে। শিকড়ের এ কাফেলায় আপনাকে স্বাগতম।
মুফতি মাওলানা মুহাম্মাদ জামালউদ্দীন